মিশরে বিজয় দিবস উদযাপন

আফছার হোসাইন (কায়রো মিশর-থেকে)

নীলনদ আর পিড়ামিডের দেশ মিশরে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও উৎসবমূখর পরিবেশে মহান বিজয়ের ৫২তম বার্ষিকী উদযাপন করল প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল‌ ৯টায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচী শুরু করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ।

দুপুর ১২.৩০ মিনিটে দূতাবাসের হলরুমে আয়োজিত বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে মিশরের প্রখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় আল- আজহার -এর অধ্যাপক ও শিক্ষক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী ছাত্র, জাতিসংঘ কর্মকর্তা, মিশরে বাংলাদেশের বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীগণ, পেশাজীবী ও শ্রমজীবীসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

শিশির কুমার সরকার এর সঞ্চালনায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এর পর দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকা থেকে পাঠানো রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনান যথাক্রমে, দুতালয় প্রধান মোহাম্মদ ইসমাইল হোসাইন, দ্বিতীয় সচিব আতাউল হক ও তৃতীয় সচিব শিশির কুমার সরকার প্রমুখ।

ছবিঃ আফসার হোসাইন

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও দেশের উন্নয়নের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করার পর রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে আগত সকল অতিথিবৃন্দকে স্বাগত ও উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে বক্তৃতা শুরু করেন।

রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর অবিসংবাদিত নেতৃত্বের কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি কৃতজ্ঞচিত্তে আরো স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের যাঁদের সর্ব্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।

ছবিঃ আফসার হোসাইন

রাষ্ট্রদূত আরো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিদেশী বন্ধুসহ যাঁরা আমাদের বিজয় অর্জনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন। আমাদের জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সুখী, সমৃদ্ধ ও স্বাধীন ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ার।

সামিনা নাজ আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা তাঁর স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে অগ্রগতি ও উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন এবং গত ১৫ বছরে টেকসই উচ্চ প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

ছবিঃ আফসার হোসাইন

বিনিয়োগ বান্ধব নীতি, বিশাল অভ্যন্তরীন বাজার, কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং কঠোর পরিশ্রমী দক্ষ জনগণ বাংলাদেশকে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে পরিনত করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই মুহুর্তে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। লন্ডনের সেন্টার ফর ইকোনমিকস এন্ড ব্যাংকিং রিসার্চ অনুসারে, ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এই মুহুর্তে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। লন্ডনের সেন্টার ফর ইকোনমিকস এন্ড ব্যাংকিং রিসার্চ অনুসারে, ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে বলে আশা করা যায়।

ছবিঃ আফসার হোসাইন

বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় তিনগুন বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালে ১,৬৬৪/- মার্কিন ডলার এবং ২০২২ সালে ২,৮২৪/- মার্কিন ডলার যা ২০০৫ সালে ছিল ৫১১/- মার্কিন ডলার। ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ বার্ষিক ৬% হারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের এ সাফল্যের পিছনের চালিকা শক্তি।

রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূর প্রসারী নেতৃত্বে সরকার “ভিশন-২০৪১” এবং মাতৃভূমিকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে এবং এ ব্যাপারে সকল প্রবাসীকে তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত।

ছবিঃ ঈসা আহমাদ ইসহাক

অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সকলকে বাঙালী ঐতিহ্যে দুপুরের খাবারে আপ্যায়ন করা হয়।

আফছার হোসাইন

বিশেষ প্রতিনিধি ও কলামিস্ট, মিশর

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Back to top button