মিশরে বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতীয় শোক দিবস পালন।
বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস কায়রো
পিড়ামিড আর নীল নদের দেশ মিশরে বিভিন্ন কর্মসূচী ও যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। সোমবার (১৫ আগস্ট) দিবসটি উপলক্ষে দূতালয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হয়। সকাল ৯.৩০ মিনিটে মিশরে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে ও আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন ।
সন্ধ্যা ৬:৩০ মিনিটে দুতাবাস হল রুমে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মিশরীয় নাগরিক ওসামা এল-বিলী ও মোনাজাত করেন ফাহিম আহমেদ। রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এ শাহাদাতবরণকারী বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহিদদের পবিত্র স্মৃতির সম্মানে ও স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন মিশর প্রবাসীরা।
দূতাবাস কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফেরদৌস এর উপস্থাপনায় জাতীয় শোক দিবসে আলোচনা সভার প্রথমেই দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা থেকে পাঠানো রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনান যথাক্রমে দূতালয় প্রধান মুহাম্মদ ইসমাঈল হুসাইন, তৃতীয় সচিব মোহাম্মদ আতাউল হক, রফিকুল ইসলাম, ফারুক হোসেন ও রেজাউল করিম প্রমুখ। পরে ‘BangaBandhu forever in our head’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যা দর্শক শ্রোতাদের মন বেদনা-ভারাক্রান্ত করে তোলে।
এসময় বঙ্গবন্ধুর উপর রচিত কবিতা ও গানের মাধ্যমে শোকদিবসের করুণ স্মৃতি বাঙময় হয়ে উঠে। আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্য থেকে অনেকে স্বত:স্ফ‚র্তভাবে বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান, জীবন ও কর্মের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরেন। তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাজীবন জেল-নির্যাতন ভোগ করে অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে আমাদের একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ উপহার দিয়েছেন। সেই দেশের গর্বিত নাগরিক হিসাবে আমরা আজ বিদেশের মাটিতে সগৌরবে অবস্থান করছি। বাঙ্গালী জাতির ইতিহাস তথা বিশ্বের ইতিহাসে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ এক কলঙ্কিত অধ্যায় কিন্তু সেই শোকাবহ ইতিহাস থেকে আমরা দেশপ্রেম ও দেশসেবার সূদৃঢ় শপথ গ্রহণ করব।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, জন্মভূমির প্রতি আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য যেন ভুলে না যাই, সেজন্যই বঙ্গবন্ধুর জীবন-সংগ্রাম বারবার স্মরণ করতে হবে, আমাদের দীক্ষা নবায়ন করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন যে, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে “রূপকল্প-২০৪১” বাস্তবায়নে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। তিনি সকল প্রবাসীকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশ গড়ার কাজে যার যার সাধ্যমত অবদান রাখার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালে ‘ওআইসি ইয়থ ক্যাপিটাল, ঢাকা’ শীর্ষক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী মিশরীয় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম।
মিশরে অধ্যয়নরত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত প্রবাসী বাঙ্গালীগণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।