ফজিলতের মাস রমজানুল মোবারক

জুমা আলোচনা (বাইতুল আহ্ছান জামে মসজিদ, পশ্চিম কাজিপাড়া)

বিশেষ দ্রষ্টব্য
  • সংক্ষেপিত ও ঈষৎ পরিবর্তিত। শ্রুতিলিখন : প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী

সম্মানিত খতিব হাফেজ মাওলানা আনিসুর রহমান আল্লাহ তায়ালার হামদ ও রসুলুল্লাহ সা.-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করেন। এরপর রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত নিয়ে পুরো সময়টা আলোচনা করেন। তিনি সুরা বাকারার ১৮৩-১৮৪ আয়াত তেলাওয়াত ও ব্যাখ্যা করেন। সেইসাথে রোজা ও তারাবিহ সম্পর্কীয় অনেক হাদিস উদ্ধৃত করেন।

খতিব মহোদয় বলেন, রামাদান শব্দের অর্থ জ্বলিয়ে দেয়া, পুড়িয়ে দেয়া এবং রমজানের রোজা মানুষের গুনাহ জ্বলিয়ে তাকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করে। এই রোজা শুধু আমাদের উপরই নয় আল্লাহর পক্ষ থেকে যতো শরিয়ত আসছে সবার প্রতি ফরজ ছিল। এখনো বিভিন্ন ধর্মাবলম্বির মধ্যে রোজা পালনের রেওয়াজ চালু রয়েছে। রোজা রাখার উদ্দেশ্যও আল্লাহ তায়ালা ব্যক্ত করেছেন। সেটি হলো রোজা রাখার মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে তাকওয়ার গুণ সৃষ্টি হবে। আল্লাহপাক মুত্তাকি বান্দার জন্য তৈরি করেছেন অসংখ্য নেয়ামতে ভরা জান্নাত।

মুত্তাকি ব্যক্তি অর্থ যিনি সর্বক্ষণ আল্লাহকে ভয় করে চলেন এবং তাঁর নাফরমানি থেকে দূরে থাকেন। রমজান মাসে দীর্ঘ একটি মাস নিষেধের কারণে হালাল খাদ্যখানা গ্রহণ থেকে আমরা বিরত থাকি। বাকি সময়ে আল্লাহর হারাম কাজে একজন রোজাদার কি কখনো শরীক হতে পারে? এই রমজান মাসে এবং রমজান পরবর্তী সময়ে কেউ যদি আল্লাহর হারাম থেকে বিরত হতে না পারে তবে তার এই রোজা রাখাতে আল্লাহর কোনই প্রয়োজন নেই।

শাবান মাসের শেষে রসুলুল্লাহ সা. সমবেত সাহাবিদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আল্লাহপাক তোমাদের জন্য রমজান মাসে দিনে রোজা ফরজ করেছেন এবং আমি তোমাদের প্রতি রাতের নামাজ সুন্নাত করে দিলাম। আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘যে লোক ঈমান ও এহতেসাবের সাথে দণ্ডায়মান হবে আল্লাহপাক তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন।’

তিনি হাদিস উদ্ধৃত করে বলেন, এই মাসের একটি নফল অন্য সময়ের ফরজের সমান এবং একটি ফরজ অন্য সময়ের সত্তরটি ফরজের সমান। প্রত্যেকটি আমলের সওয়াব দশ থেকে সাতশ গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয় কিন্তু রোজা ব্যতিক্রম। আল্লাহপাক রোজাদারের সওয়াব নিজ হাতে দান করবেন। তাই আমাদের সবারই উচিত রোজার উদ্দেশ্যকে স্মরণে রেখে সকল পাপাচার থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা। ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে নেয়ার এ এক অপূর্ব সুযোগ।

তারাবিহ প্রসঙ্গে খতিব মহোদয় বলেন, রসুলুল্লাহ সা. নিজে তারাবিহ পড়েছেন এবং তাঁর সাহাবিদের উৎসাহ প্রদান করেছেন। তারাবিহ নামাজের রাকাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেহেতু ওমর রা.-এর আমল থেকে তারাবিহ নামাজ বিশ রাকাত চলে আসছে এবং সাহাবায়ে কেরাম তা মেনে নিয়ে আমল করেছেন তাই আমাদের জন্য বিশ রাকাত তারাবিহ পড়া সুন্নত। রসুলুল্লাহ সা. তাঁর সুন্নাত এবং খুলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নাতকে আমল করার জন্য তাঁর উম্মতকে বলে গেছেন।

হক আদায় করে পূর্ণ মাস রমজানের রোজা পালনের জন্য তিনি আল্লাহর কাছে তৌফিক কামনা করেন।

প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী

কলামিস্ট এবং সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল, কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Back to top button