মিসরীয় নওরোজের শুভেচ্ছা
শুভ মিসরীয় নববর্ষ ১লা তূত ৬২৬৩ সাল !
পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তরে ছড়িয়ে থাকা প্রতিটি মানব সভ্যতাই ঋতু বৈচিত্রের নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে একটি করে নিজস্ব ক্যালেন্ডার তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই, এসব বর্ষপঞ্জিকা তৈরি হয়েছিলো কৃষি ব্যবস্হাপনা ধরে রাখার জন্য কারণ এটাই মানুষের জীবনের প্রধান উপায় ও উপার্জনের একমাত্র উৎস ছিল।
১১ সেপ্টেম্বর, ১লা তূত বা তাহুত – প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের দেবতা – ‘আইবিস’ বা ‘আবু মিনগাল’ (লম্বা ঠোঁট ও পা বিশিষ্ট ) শুভ পাখি এর প্রতীক! ঈসা আঃ এর জন্মের ৪২৪১ বছর পূর্ব থেকে এই সাল গণনা শুরু হয়েছিল। গতকালটি ছিল ৬২৬৩ তম মিশরীয় কৃষি বছরের শুরুর দিন, অর্থাৎ রোপণ মৌসুমের শুরু এবং গ্রীষ্মের শেষদিন। প্রাচীন কাল থেকেই মিশরবাসী তাদের ভাষায় শুভকামনার বার্তাটি এভাবেই বিনিময় করতঃ وپت رنپت نفرت WPT RNPT NFRT অর্থাৎ মিসরি নববর্ষের শুভেচ্ছা! হে মিসরবাসী! তোমাদের জন্য ও সমস্ত বিশ্ব মানবতার জন্য অশেষ শুভকামনা!! (كل سنة ووأنتوا طيبين يا مصريين عليكم و علي الإنسانية كلها)
সভ্যতার দেশ মিশর আজ ৬২৬৩ বছর অতিক্রম করেছে। তুতের প্রথম দিন দিয়ে যা কপ্তিক বছরের প্রথম মাসের নাম। এটি মানব সভ্যতা ও ইতিহাসে প্রাচীনতম ক্যালেন্ডার হিসাবে আন্তর্জাতিকভাবে বিবেচিত। এই দিনটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে ১১ সেপ্টেম্বর। প্রাচীন মিশরের বছরটি কৃষিচক্র অনুসারে তিনটি ঋতু নিয়ে গঠিত।
প্রথম ঋতুর নাম আখেতঃ এটি চাষের মৌসুম, যেখানে নীল নদের পানির স্তর বৃদ্ধি পায় যাতে মাটি চাষের জন্য প্রস্তুত হয়।
দ্বিতীয় ঋতুর পেরেটঃ বীজ বপন ও ফসল জন্মের মৌসুম।
তৃতীয় ঋতুর নাম শ্যামোঃ ফসল কাটা ও সংগ্রহের মৌসুম।
প্রত্যেক মৌসুম চার মাসে, প্রতি মাস ৩০ দিনে বা তিন সপ্তাহে বিবেচনা করা হতো আর প্রত্যেক সপ্তাহ ১০ দিনে হিসেব ধরা হতো। এই হিসেবে ১২ মাসে ৩৬০ দিন। বাকি ৫/৬ দিনের জন্য তারা একটি অতিরিক্ত ছোট মাসের গণনা করত যার নাম ছিলঃ ন্যাসী। অন্যান্য মাসগুলো যথাক্রমে- তূত, বাবাহ, হাতূর, ক্যাহাক, তূবাহ, আমশীর, বারামাহাত, বারামূদাহ, ব্যাশনেস, বাঊনাহ, আবীব ও মেছরী।
মিশরীয় নতুন বছরে শুভেচ্ছা জানাই সবাইকে। পুরাতন দিনের শিক্ষা এবং সম্মানের সাথে সামনের দিনগুলো আরও মর্যাদা ও সাহসের হোক, এই কামনায়।