তালেবানের সরকার ঘোষণায় চীনের সমর্থন আমেরিকার উদ্বেগ

বাংলাদেশ সহ বেশিরভাগ দেশ যখন অপেক্ষা করে দেখার নীতি নিয়েছে, চীন তখন জানিয়ে দিয়েছে যে তারা তালেবানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রস্তুত।

৩৩ জন মন্ত্রিসভার সদস্যের সমন্বয়ে গত (৭ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানের নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন মন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেছে তালেবান। এ সরকারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভাকে নেতৃত্ব দেবেন মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ, এবং উপ-প্রধান হিসেবে থাকবেন গোষ্ঠীটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা আবদুল গনি বারাদার।

 এ নতুন তালেবান সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে চীন

চীনা কর্তৃপক্ষ বলেছে, তালেবান কর্তৃপক্ষের নতুন সরকার গঠনের ফলে তিন সপ্তাহের অরাজক পরিস্থিতির অবসান হয়েছে। চীনা কর্তৃপক্ষ তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে এবং দেশ পুনর্গঠনে নিজেদের আত্মনিয়োগ করে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ও (পশ্চিমা বাহিনীর সহযোগিতাকারী) আফগানদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে চীন। চীনের মতে যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপ ছিল বেপরোয়া ও অব্যস্থাপনায় পরিপূর্ণ। চীন মনে করে তালেবানের নতুন সরকার আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা নিয়ে আসবে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেছেন।

নতুন তালেবান সরকার ঘোষণার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।

তুরস্ক

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন যে তিনি আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যালোচনা করছেন। আমরা জানি না যে এ নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে তালেবানরা কত দিন দেশ চালাবে। কিন্তু, আমাদের সকলের উচিৎ বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে তাদের আরো সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করা।

কাতার

কাতারের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লোলওয়াহ আল-খাতার সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে তালেবানরাই আফগানিস্তানের বর্তমান শাসক। তবে তালেবানদেরকে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে পদক্ষেপ নিতে হবে। তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেই তাদের বিচার করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্র

এক বিবৃতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আমরা দেখেছি তালেবানরা যাদেরকে আফগানিস্তানের মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছে তারা তাদের সদস্য অথবা সহযোগী। এছাড়া এ মন্ত্রিসভায় কোনো নারীকে স্থান দেয়া হয়নি। আমরা তালেবানের কিছু মন্ত্রীকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে আমরা তালেবান কর্তৃপক্ষের কথায় নয় বরং কাজ দিয়ে তাদের বিচার করব। আমরা আশা করি তালেবান কর্তৃপক্ষ আফগানিস্তানে আটকে পড়া বিদেশী ও (পশ্চিমা বাহিনীর সহযোগিতাকারী) আফগানদের নিরাপদে বাইরের দেশগুলোতে যেতে দিবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো বলেছে, আমরা আশা করি যে তালেবান কর্তৃপক্ষ আফগানিস্তানের মাটিকে কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে না। কারণ, বিশ্ব তাদের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করছে।

জাতিসঙ্ঘ

তালেবানের নতুন সরকার ঘোষণার বিষয়ে জাতিসঙ্ঘের মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, একমাত্র আলোচনা ও সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে আফগানিস্তানে প্রকৃত শান্তি আসবে। একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য প্রত্যেক আফগানের মানবাধিকার সংরক্ষণ করতে হবে।

জাতিসঙ্ঘের নারী সংস্থা

জাতিসঙ্ঘের নারী সংস্থার প্রধান প্রমিলা পেটেন বলেন, তালেবান কর্তৃপক্ষের উচিৎ তাদের নতুন সরকারে নারীদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা।

অনলাইন ডেস্ক

সংবাদটি এবং সংযুক্ত মিডিয়া (ছবি-ভিডিও-গ্রাফ) বিভিন্ন দেশীয় অথবা আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা হতে সংগ্রহীত অথবা অনুবাদকৃত। এর কোন কৃতিত্ব অথবা কপিরাইট আমাদের নয়।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Back to top button