শার্ম থেকে ফিরেও অস্বস্তি (পর্ব-২)

মনিরুল ইসলাম , রাষ্ট্রদূত - মিশর

বিশেষ দ্রষ্টব্য
  • অন্ধ হলেও প্রলয় তো আর বন্ধ রবে না। প্রলয় যে শুরু হয়ে গেছে... ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ আমাজন নাকি ... দোষণে পেষণে বাংলাদেশের ফুসফুস ও ভরসাস্থল--'সুন্দরবন' ও 'বঙ্গোপসাগর' ইতোমধ্যে সংকটাপন্ন।

তিন দশক ধরে দেনদরবারের পর প্রত্যাশিত অর্থের সামান্য প্রতিশ্রুতি পেলেও জলবায়ু সম্মেলনের মূল লক্ষ্য–গ্রীনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমানোর ব্যাপারে আশানুরূপ মতৈক্য ও কার্যক্রম নির্ধারিত হয়নি। এই সম্মেলনের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হল প্রায় ৬০০ প্রভাবশালী জীবাশ্মওয়ালা লবিস্ট স্টেটাস-কূ বজায় রাখতে সরকারগুলোকে চাপে রেখেছে, সেজন্য কয়লা-গ্যাস-তৈল ব্যবহার কমানোর ব্যাপারে জোর কোনো সুপারিশ নেই, নেই কারো দৃঢ় পদক্ষেপ বা নেতৃত্ব। ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রার বৃদ্ধি শিল্পায়নপূর্ব যুগের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে কিনা সন্দেহ। অর্থাৎ জলবায়ু সংকটের আসল কারণ, তথা ২০১৫ প্যারিস সম্মেলনের এই মূল প্রতিশ্রুতি থেকে দোষীরা ক্রমেই ফসকে যাচ্ছে।

কোপেনহেগেনে, সেই ২০০৯ সাল থেকে দায়ী উন্নত দেশগুলো ভোক্তভোগী গরিব দেশগুলোকে প্রতিবছর ১০০-বিলিয়ন দেয়ার কথা বলে আসছে কিন্তু প্রতিশ্রুতির সামান্যই অর্জিত হয়েছে। তাও আবার অনুদান নয়, ঋণ আকারেই বেশি। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবসায়ীরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধের কথা বলে, উপশম অভিযোজন ও সহনীয়তা অর্জনের ব্যাপারে উৎসাহ দেখায় না। অথচ গরিব বিপর্যস্ত দেশগুলোর জন্য দরকার নবায়নযোগ্য ক্লীন এনার্জি, ব্যাপক বনায়ন, অভিযোজনে ক্ষমতায়ন, টিকে থাকার লড়াইয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি।

সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে চাই একসাথে সবার কাজ করা

শার্ম সম্মেলনে ব্যক্তি সংগঠন রাষ্ট্র পর্যায়ে যে যেভাবে পারে, তাদের উৎকণ্ঠা উৎসাহ উদ্যোগ প্রকাশ করে গেছেন। এসব প্রতিবাদ বিক্ষোভ বক্তব্য মুনাফলোভী প্রতিষ্ঠানগুলোর কানে কি পৌঁছবে? ইতিবাচক পরিবর্তনে কাজের কাজ কতটুকু হবে জানি না, পরিবেশ বিশুদ্ধকরণ নিয়ে সচেতনতা যে সৃষ্টি হচ্ছে তার মূল্যই বা কম কি। তবে অর্থান্ধ জ্বালানি ব্যবসায়ীদের মনে রাখা দরকার যে, অন্ধ হলেও প্রলয় তো আর বন্ধ রবে না। প্রলয় যে শুরু হয়ে গেছে, তার খবরও কি আছে আমাদের সবার? শুনেছি ২০২৫ সালে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা শীর্ষে পৌঁছবে। ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ আমাজন নাকি কার্বন শোষণকারী থেকে কার্বন নিঃসরণকারীতে পরিণত হবে। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে উপস্থাপিত এক আলোচনায় জনৈক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, দোষণে পেষণে বাংলাদেশের ফুসফুস ও ভরসাস্থল–সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগর ইতোমধ্যে সংকটাপন্ন।

(চলবে..)

আগের পর্ব…

শার্ম থেকে ফিরেও অস্বস্তি (পর্ব-১)

সূত্র
ফেসবুক পোস্ট থেকে

এই বিভাগের আরো সংবাদ

Back to top button