গরীব দেশগুলোকে সামান্য কিছু অর্থ ও সুবিধাদি দিয়ে আরো কিছুসময় তাদের মুখ বন্ধ রাখা যাবে কিন্তু বিধ্বস্ত ভঙ্গুর জলবায়ু নিয়ে নির্যাতিতা ধরণীকে বশীভূত করা যাবে না–তীব্র খরা তাপ বন্যা ইউরোপ আমেরিকাকেও গ্রাস করবে ক্রমান্বয়ে। পাকিস্তান প্যাভিলিয়নের যুৎসই শ্লোগানটা তাই অনেকেই পছন্দ করেছে: ‘আজ যা পাকিস্তানে ঘটছে, তা শুধু পাকিস্তানেই থাকবে না।’
সমাধান? আছে। জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা ক্রমহ্রাস, ক্রমাবসান। এবং আয়েশি বিলাসী জীবনযাপন পরিত্যাগ। সুপাররিচ বা ধনিক সমাজ, কেউ কি ছাড় দেবে মুমূর্ষু পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য? আমেরিকান জীবনমানে পৃথিবীর সবাই যদি চলে, আরো নাকি পাঁচটি পৃথিবীর সম্পদ দরকার!
সচেতন হলে খোলা ঘোলা চোখেও জনগণ দেখতে পাবে তাদের ধরণীর দুরবস্থা।
বায়ু: শুধু নিঃশ্বাস নেয়ার নির্মল বায়ু দুষিত হয়েছে তা-ই নয়, আকাশে মহাকাশেও দোষণ ছড়িয়ে পড়েছে মানবিক তৎপরতায়। জল: পান ও সেচনের পানি শুধু নয়, দোষণ পৌঁছে গেছে সমুদ্রের গহিন তলদেশে। তাতে শুধু জলজপ্রাণী মরবে না, মানুষও তাদের অনুগামী হবে। মাটি: পৃথিবীতে বরফ-ঢাকা, সবুজাবৃত, জলসমৃদ্ধ ব্যবহারযোগ্য ভূমির পরিমাণ কমছে। তার পরিণতিতে খাদ্য সরবরাহ কমে আসবে। খাদ্য: দোষণের আরেকটি প্রকাশ দেখি ভেজাল ক্ষতিকর রসায়নযুক্ত খাবারের মধ্যে। স্বাস্থ্য: প্রাণীদেহে রোগের ধরন প্রকোপ তীব্রতা বাড়ছে, রোগসৃষ্টিকারী জীবাণু শক্তিশালী হচ্ছে।
শব্দদোষণ ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা প্রকটতর হচ্ছে। জনস্বাস্থ্যের অবনতির ব্যাপারে ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ-এর সর্তক বার্তায় কানে তুলো দিয়ে রেখেছে দায়ী দেশগুলো। মনে রাখা দরকার, প্রতিকূল জলবায়ুর কারণে সাগর-নদী-জলাধার সংলগ্ন উদ্বাস্তু মানুষ জীবিকাহারা হয়ে মরবে না, বেঁচে থাকার প্রয়োজনে সুখীদের বিপক্ষে লড়াই করবে। দক্ষিণ আমেরিকার মানবস্রোত কোনদিকে যাচ্ছে? সুতরাং কেউ নিরাপদ নয়!
মানুষই সবকিছুর জন্য দায়ী? আশা ভরসার কথা হলো পৃথিবীতে গত দশহাজার বছরে মানুষ ভালোটাই করেছে বেশি, মন্দটা কম। লোভটা সামলাতে পারলেই হতো।
চলবে…
আরও পড়ুন…